জন্মগতভাবে শ্রবণশক্তিহীন এক শিশুর জীবনে আলো ফোটাতে কয়েক মাস আগে প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল ককলিয়ার ইমপ্ল্যান্ট। কিন্তু সেই যন্ত্রই পরিণত হয় যন্ত্রণার কারণ। অন্তঃকর্ণে তীব্র ব্যথা, সংক্রমণ নিয়ে যখন শিশুটিকে নিয়ে আসা হয় কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে, তখন চিকিৎসকেরা চমকে যান। পরীক্ষায় ধরা পড়ে— প্রতিস্থাপিত ককলিয়ার যন্ত্রের সূক্ষ্ম তার কেটে গিয়েছে।

চিকিৎসকদের কাছে আরও অবাক করার মতো তথ্য— শিশুটির পরিবারের অজান্তেই ঘটেছে বিপত্তি। বাবা-মার বক্তব্য, শিশুটির কানের ভিতর থেকে সরু সুতো বেরিয়ে আসতে দেখে মা ভুল করে তা কেটে দেন। পরে জানা যায়, সেটি আসলে যন্ত্রের সংযোগ তার। এর ফলে পুরো যন্ত্র অকার্যকর হয়ে পড়ে।

এসএসকেএম-এর ইনস্টিটিউট অব ওটোরাইনোল্যারিঙ্গোলজি হেড অ্যান্ড নেক সার্জারির চিকিৎসক ডাঃ অরিন্দম দাস বলেন,
“শিশুটি প্রবল যন্ত্রণায় ভুগছিল। পরীক্ষা করে দেখা যায় ককলিয়ারের সূক্ষ্ম তার কেটে গেছে। এই অবস্থায় যন্ত্র কাজ করবে না। সংক্রমণ সারানোর চিকিৎসা চলছে। পরে নতুন করে ইমপ্ল্যান্ট সার্জারির পরিকল্পনা করতে হবে।”

চিকিৎসক মৈনাক মৈত্র-সহ উপস্থিত অন্যান্য বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরনের অস্ত্রোপচারের পর রোগীর পরিবারকে বিশেষ পরামর্শ দেওয়া হয়। সেই নির্দেশনা মেনে চলা অত্যন্ত জরুরি। কারণ, সামান্য ভুল পদক্ষেপে ব্যর্থ হতে পারে দীর্ঘ ও ব্যয়সাপেক্ষ চিকিৎসা।

কেন গুরুত্বপূর্ণ ককলিয়ার ইমপ্ল্যান্ট?

ককলিয়ার ইমপ্ল্যান্ট এমন এক যন্ত্র, যা জন্মগতভাবে বধির বা শ্রবণশক্তি হারানো শিশুদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে পারে। সঠিক সার্জারি ও রক্ষণাবেক্ষণ হলে শিশু সহজেই কথোপকথনে অংশ নিতে পারে এবং পড়াশোনাতেও এগিয়ে যেতে পারে।

অভিভাবকদের সতর্কবার্তা

এসএসকেএম-এর চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতে অভিভাবকদের আরও সতর্ক হতে হবে। ককলিয়ার ইমপ্ল্যান্ট একটি সূক্ষ্ম ও সংবেদনশীল যন্ত্র। তাই প্রতিস্থাপনের পর শিশুর কানে কোনও অস্বাভাবিকতা দেখা দিলে অবিলম্বে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই একমাত্র সমাধান।