হাঁটুর ব্যথা আর শুধু ওষুধ বা পেইন কিলারের উপর নির্ভর করবে না। আধুনিক চিকিৎসা প্রযুক্তিতে এবার রোগীর নিজের রক্ত ব্যবহারের মাধ্যমে কমানো যাবে অস্টিও আর্থাইটিসজনিত হাঁটুর তীব্র যন্ত্রণা। সেই উদ্দেশ্যে সেন্ট্রিফিউজ মেশিন এসে পৌঁছেছে জলপাইগুড়ি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে। খুব শীঘ্রই চালু হচ্ছে প্লেটলেট রিচ প্লাজমা থেরাপি (PRP Therapy)।
পিআরপি কীভাবে কাজ করে?
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিশেষ করে নারীদের ক্ষেত্রে হাঁটুর কার্টিলেজ ক্ষয়ে যেতে থাকে।
কারণ: সাইনোভিয়াল ফ্লুইড তৈরি হওয়া কমে যায়।
এর ফলে—
অস্থিসন্ধি ক্ষতিগ্রস্ত হয়
হাঁটু ফুলে যায়
ব্যথা ও নড়াচড়া সীমিত হয়
রক্তের প্লাজমায় থাকা গ্রোথ ফ্যাক্টর কার্টিলেজকে পুনর্গঠনে সাহায্য করে।
ইনজেকশনের মাধ্যমে সেই প্লাজমা প্রয়োগ করলেই—
✔ ব্যথা কমে
✔ হাঁটুর চলাচল বাড়ে
✔ অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন অনেক ক্ষেত্রে এড়ানো যায়
প্রক্রিয়া কতটা সহজ?
ডে কেয়ার সার্ভিস — হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে না
মাত্র ১.৫–২ ঘণ্টা সময় লাগে
সামান্য রক্ত সংগ্রহ করে সেন্ট্রিফিউজ মেশিনে প্লাজমা তৈরি
হাঁটু সাময়িক অবশ করে ইনজেকশন প্রয়োগ
৬ মাস পর প্রয়োজনে পুনরায় দেওয়া যেতে পারে
একাধিক রোগীর দুই হাঁটুতে প্রয়োগের ক্ষেত্রে
🔹 প্লাজমা প্রয়োজন: ১২–১৪ মিলিলিটার
🔹 রক্ত সংগ্রহ: ৫০–১০০ মিলিলিটার
রোগীর সুরক্ষা বিষয়ে চিকিৎসকদের মত
ডাঃ শংকর রায় (প্রধান – অ্যানাস্থেশিয়া বিভাগ ও ইনচার্জ – পেইন ম্যানেজমেন্ট ক্লিনিক) জানিয়েছেন:
“পিআরপি চিকিৎসায় তেমন কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। কারণ এটি সম্পূর্ণ নিজস্ব রক্তের প্লাজমা।”
চিকিৎসা কোথায় ও কবে পাওয়া যাবে?
📌 জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল
প্রতি মঙ্গলবার — পেইন ম্যানেজমেন্ট ক্লিনিক
প্রতি বৃহস্পতিবার — প্রয়োজনীয় প্রোসিডিওর (নার্ভ ব্লক/অ্যাব্লেশন)
প্রথমে অস্টিও আর্থাইটিস রোগীদেরই এই চিকিৎসা দেওয়া হবে। কোমরের ব্যথার রোগীদের জন্য পৃথক চিকিৎসা চলছে।
সুপারের বক্তব্য
ডাঃ কল্যাণ খাঁ, সুপার —
“পেইন ম্যানেজমেন্ট ক্লিনিকে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। পিআরপি চালু হলে হাঁটুর ব্যথার রোগীরা আরও দ্রুত উপশম পাবেন।”



