ত্বকের সমস্যা দূর করতে দ্রুত ফলের আশায় বহু মানুষ বেছে নেন স্টেরয়েডযুক্ত মলম বা ক্রিম, যেগুলির অনেকেই স্বাস্থ্যকর নয়। স্টেরয়েড, ভারী ধাতু ও ক্ষতিকর রাসায়নিকে ভরপুর এই ফেয়ারনেস ক্রিম বা দাদের মলমগুলো দীর্ঘমেয়াদে ত্বকে মারাত্মক ক্ষতি করে।
এই সমস্যার বিরুদ্ধে গত এক দশক ধরে সচেতনতা বাড়াতে অবিচল ভাবে কাজ করে এসেছে Indian Dermatologists Association-এর Task Force for Topical Steroid Abuse (ITATSA)। তাদের এই গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক ও স্বাস্থ্যগত উদ্যোগ এবার বিশ্ব দরবারে স্বীকৃতি পেল।
লন্ডনে রাজকীয় সম্মান
সম্প্রতি লন্ডনের Royal College of Physicians (RCP) তাদের বার্ষিক “Excellence in Patient Care Awards”–এ বিশ্বের সেরা তিনটি স্বাস্থ্য উদ্যোগের মধ্যে ITATSA-এর এই প্রয়াসকে সম্মানিত করে।
ইতাতসা–র প্রতিষ্ঠাতা ও বিশিষ্ট ত্বকচিকিৎসক ডা. কৌশিক লাহিড়ী-র নেতৃত্বে এই উদ্যোগ যে পরিমাণ ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে, তা লিভারপুলে আয়োজিত পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে বারবার উল্লেখ করা হয়।
আরসিপি–র প্রেসিডেন্ট মুমতাজ প্যাটেল এবং ক্লিনিক্যাল ভাইস প্রেসিডেন্ট জন ডিন ব্যক্তিগতভাবে কৌশিক লাহিড়ী এবং তাঁর টিমের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
দীর্ঘ লড়াই, মাইলফলক সাফল্য
২০১৪ সাল থেকে যে জেহাদ শুরু করেছিলেন কৌশিকবাবুরা, তার ফল মিলতে শুরু করে ২০১৮ সাল থেকে—ভারতে স্টেরয়েডযুক্ত ক্রিম ও মলমের বিক্রি ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকে। শুধু সাধারণ মানুষই নয়, ফার্মাসিস্ট, জেনারেল প্র্যাকটিশনারদের মধ্যেও সচেতনতা গড়ে তোলার কাজ করে গেছেন তাঁরা।
কৌশিকবাবুর কথায়, “এই সম্মান শুধু আমাদের নয়—আমাদের ‘কোর টিম’, চিকিৎসক বন্ধুরা এবং দেশজুড়ে স্বাস্থ্যকর্মীদের মিলিত সাফল্য।”
টিম ইতাতসার সদস্যরা
এই সাফল্যের পিছনে ছিলেন:
-
ডা. আবীর সারস্বত
-
ডা. শ্যাম ভার্মা
-
ডা. অরিজিৎ কুণ্ডু
-
ডা. রাজীব শর্মা
-
ডা. রজত দামিশেট্টি
তাঁদের একাগ্রতা এবং চিকিৎসা-নৈতিকতায় অটল অবস্থান আজ দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেল।
উপসংহার
ত্বকের সৌন্দর্য বাড়াতে শর্টকাট নয়, চাই সচেতন পন্থা। ভারতীয় ত্বকচিকিৎসকদের এই নিরলস প্রয়াস ভবিষ্যতে আরও অনেককে নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত স্কিন কেয়ারের পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে। আন্তর্জাতিক মঞ্চে এই স্বীকৃতি একদিকে যেমন গর্বের, অন্যদিকে দায়িত্বও অনেক বাড়িয়ে দিল।