শিঙাড়া-জিলিপির সঙ্গেও এবার ‘হেল্থ ওয়ার্নিং’! কেন্দ্রের নজিরবিহীন পদক্ষেপ
বর্ষায় চায়ের সঙ্গে শিঙাড়া, রথে জিলিপি বা সন্ধ্যেবেলায় এক কাপ চায়ের সঙ্গে বিস্কুট—এই খাবারগুলিই বাঙালির জীবনের স্বাদে রোজকার আনন্দ।
কিন্তু জানেন কি, এই জনপ্রিয় খাবারগুলোও এখন সিগারেটের মতোই সতর্কীকরণ বার্তার আওতায় আসতে চলেছে?
স্বাস্থ্যমন্ত্রকের নির্দেশ অনুযায়ী, এবার থেকে কেন্দ্রীয় সরকার অধীনস্থ সংস্থাগুলির ক্যান্টিন ও ফুড আউটলেটে চপ, শিঙাড়া, জিলিপি, বড়া পাও, লাড্ডু, কোল্ড ড্রিঙ্ক ও জ্যুসের মতো খাবারের পাশেই সতর্কীকরণ বোর্ড ঝোলাতে হবে। এই বোর্ডে উল্লেখ থাকবে কত চামচ চিনি ও তেল প্রতিটি খাবারে রয়েছে।
কেন এই পদক্ষেপ?
বিশেষজ্ঞদের মতে, অতিরিক্ত চিনি ও ফ্যাট যুক্ত খাবার এখন তামাকের মতোই স্বাস্থ্যঝুঁকিপূর্ণ। এগুলোর কারণে
-
ডায়াবেটিস,
-
হৃদরোগ,
-
উচ্চ রক্তচাপ এবং
-
স্থূলতা (Obesity) দ্রুত বেড়ে চলেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) তথ্য অনুযায়ী, ভারতে ৭.৭ কোটি মানুষ টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত, এবং আরও ২.৫ কোটি মানুষ প্রি-ডায়াবেটিক অবস্থায় রয়েছেন।
২০৫০ সালের মধ্যে ভারতের ৪৫ কোটি মানুষ ওবেসিটিতে আক্রান্ত হতে পারেন—এই পূর্বাভাস এখন ভাবনার কারণ।
কী থাকবে সেই সতর্কবার্তায়?
প্রতিটি খাবারের পাশে বোর্ডে লেখা থাকবে—
-
কত চামচ তেল বা ঘি রয়েছে
-
কত চামচ চিনি রয়েছে
-
প্রতিটি খাবারের সম্ভাব্য স্বাস্থ্যঝুঁকি
এই প্রচার শুরু হচ্ছে নাগপুর AIIMS থেকে এবং ধাপে ধাপে দেশজুড়ে ছড়িয়ে দেওয়া হবে।
চিকিৎসকদের মতামত কী?
ডা. সুনীল গুপ্তা, মধুমেহ বিশেষজ্ঞ বলেন,
“যদি মানুষ জানেন যে একটি গুলাব জামুনে পাঁচ চামচ চিনি রয়েছে, তবে তাঁরা তা খাওয়ার আগে ভাববেন।”
কার্ডিয়োলজিক্যাল সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া (নাগপুর শাখা)-র সভাপতি অমল আমালে বলেন,
“এই মুহূর্তে চিনি ও ট্রান্স ফ্যাট একেবারে তামাকের মতোই বিপজ্জনক।”
উপসংহার
খাবারের স্বাদ যেমন দরকার, তেমনই দরকার সচেতনতা। এই নতুন উদ্যোগ শুধু নিয়ন্ত্রণ নয়, সচেতনতার মাধ্যম—যাতে মানুষ নিজের স্বাস্থ্য নিয়ে ভাবেন এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার পথে অগ্রসর হন।