উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা বিজ্ঞানে এক বিরল সাফল্যের নজির গড়ল অর্থোপেডিক বিভাগ। শিরদাঁড়া থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া এক রোগীর ঘাড় সফলভাবে জোড়া লাগালেন এখানকার চিকিৎসকেরা। এই অপারেশনের মাধ্যমে ৬৬ বছর বয়সী রাজগঞ্জের বাসিন্দা রামশাই ওরাওঁ যেন দ্বিতীয় জীবন ফিরে পেলেন।
অর্থোপেডিক বিভাগের প্রধান ডা. পার্থসারথি সরকার জানান, “রোগীটি ঘাড়ে মারাত্মক আঘাত পান, যার ফলে ঘাড়ের হাড় ভেঙে গিয়ে শিরদাঁড়া থেকে আলাদা হয়ে যায়। এতে স্নায়ুতন্ত্রও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, এবং রোগীর শরীরে প্যারালাইসিস দেখা দেয়।”
ছয় ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলে এই জটিল অস্ত্রোপচার। ঘাড়ের সামনে ও পিছনের দিক দিয়ে অপারেশন করে বিশেষ ধাতব প্লেটের সাহায্যে ঘাড়কে পুনরায় শিরদাঁড়ার সঙ্গে যুক্ত করা হয়। চিকিৎসকদের মতে, এটি অত্যন্ত জটিল ও ঝুঁকিপূর্ণ সার্জারি, যেখানে সামান্য ভুলও প্রাণঘাতী হতে পারত।
ডা. পার্থসারথি সরকার বলেন,
“এই ধরনের অস্ত্রোপচার উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজে এই প্রথম করা হল। নার্সিংহোমে এই সার্জারি করতে গেলে ৬ থেকে ৭ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়, কিন্তু এখানে তা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে হয়েছে। রোগীর শারীরিক অবস্থা এখন স্থিতিশীল এবং দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠছেন।”
চিকিৎসক মহলে এই সাফল্যকে ‘বিশ্বমানের সার্জিক্যাল কৃতিত্ব’ হিসেবে দেখা হচ্ছে। উত্তরবঙ্গের মতো অঞ্চলে এই ধরনের জটিল অর্থোপেডিক সার্জারির সফল প্রয়োগ রাজ্যের সরকারি চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নতির দিকেই ইঙ্গিত দিচ্ছে।



